চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টি-নন্দন কয়েকটি জায়গা

আমাদের পাহাড়ে ঘেরা সবুজের মনোরম পরিবেশের পুরো ক্যাম্পাসটাই দৃষ্টিনন্দন।
তবে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত লোকেশন সম্পর্কে এখানে সংক্ষিপ্তভাবে লিখলাম-

    চবি শাটল



















  • (১)প্রাকৃতিক ঝর্ণা


এটি কলা ফ্যাকাল্টির ঝুপড়ির পাশদিয়ে যেতে হয়। দেখার মত অপরূপ সৌন্দর্যের ১টি স্থান। 




এই জায়গাটি সম্পর্কে বেশ কিছু অতীত দুর্ঘটনার রেকর্ড আছে। দেখা যায় প্রতি বছরই এখানে বেড়াতে গিয়ে অন্তত ২-১ জন মানুষ ঝর্নার পানিতে পড়ে গিয়ে নিচে আটকা পড়ে প্রান হারায়। এজন্য গত বছর অনেকদিনের জন্য এই স্থান পরিদর্শনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এখানে কেউ গেলে যথার্থ সাবধানতা অবলম্বন করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

  • (২) বোটানিক্যাল গার্ডেনঃ


এটি চবি কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারের পাশে লেডিস হলের সামনে দিয়ে যেতে থাকলে অনেক দূর পথ চলার পর পাওয়া যাবে। বোটানি ডিপার্টমেন্টের জন্য এটি তৈরী হলেও এটি সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত।নানা প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের নিরাপদ আবাসস্থল এটি। এছাড়া সারা বছর ব্যাপি নানা রঙের ফুল ও ফল এই বিশাল বাগানকে পরিবেষ্টিত করে রাখে। এটি কপত-কপতির ডেটিং স্পটের জন্য খ্যাত।

  • (৩) ভূতের বাড়িঃ


ভিসি স্যারের বাসভবন কোন এক অজ্ঞাত কারনে ভূতের বাড়ি নামে খ্যাত। এটির অবস্থান খালেদা জিয়া হলের (লেডিস হল)বিপরীতে পাহাড়ের উপর। এখানে স্টুডেন্ট ও সর্বসাধারনের জন্য প্রবেশ নিষেধ এবং সর্বসাধারনের প্রবেশ বন্ধে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে জায়গাটিতে কোন রকমে প্রবেশের সুযোগ পেলে এর অপরূপ ভৌতিক সৌন্দর্যের দেখা মিলে।

  • (৪) সেন্ট্রাল ফিল্ডঃ


এলএলবি ফ্যাকাল্টি যাওয়ার পথে এটির দেখা পাওয়া যাবে। বিশাল বড় এই মাঠে আছে বাস্কেটবল-ভলিবল কোর্ট সহ
সকল প্রকার খেলার সুব্যবস্থা।

  • (৫) পরিত্যাক্ত সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামঃ


সেন্ট্রাল ফিল্ড থেকে একটু দূরেই এটির অবস্থান। যা কিনা আরেক ভুতের বাড়ি নামে পরিচিত।অপরূপ আর্কিটেকচারাল ডিজাইনে তৈরী সুবিশাল এই ভবনটি উদ্ভোদনের ২ বছরের মাঝে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়।পরিত্যাক্ত ঘোষনা করার জন্য যেসব কারন লোকমুখে শোনা যায়-

* এখানে কোন প্রোগ্রাম হলে প্রোগ্রাম চলাকালিন অবস্থায় কোথা থেকে অজস্র সাপ মূল কক্ষে ঢুকে পড়ে, এবং প্রোগ্রাম পন্ড হয়ে যায়। যা কিনা কার্বলিক এসিড সহ নানা ব্যবস্থা গ্রহনের পরেও দূর করা সম্ভব হয়নি।

* এমনও শোনা যায় এখানে নাকি খুব রিসেন্ট সময়ে এটি রিপায়েরিং এর জন্য কিছু শ্রমিককে ভবনের ভিতর পাঠানো হয়,তারা শতশত সাপ দেখে পালিয়ে চলে আসে।

* কেউ কেউ বলে গভীর রাতে এর সামনে অনেকেই ভৌতিক বিষয়ক অনেক খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে।

* ভবনটি তৈরিতে কাঠামোগত কিছু ত্রুটি থাকার কারনে এটির ছাদ চুয়ে বৃষ্টি ও টাঙ্কির পানি ভিতরে প্রবেশ করে এর ভিতরকার
দেওয়াল নষ্ট করে দেয়। যা কোন মতেই আর রিপেয়ারের মাধ্যমে দূর করা সম্ভব হয়নি, এজন্য এটিকে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়।

  • (৬) প্যাগোডাঃ


এটি মূল ক্যাম্পাসের বাহিরে অবস্থিত। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়, দেখতে দৃষ্টিনন্দন ১টি জায়গা।

  • (৭) সুইচ গেটঃ


প্যাগোডা ফেলে কিছুদূর গেলে সুইচ গেট।অসাধারন সুন্দর একটি শীতল, নিরিবিলি ও মন ভাল করা পরিবেশ যেখানে রয়েছে পানি বাঁধ দিয়ে আটকানোর একটি সুইচ গেট।

  • (৮) শহীদ মিনার 

  • চবি শহীদ মিনার


চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গন আপনার মন ভুলিয়ে দেবে।


(৯) গোল পুকুর


চবি গোল পুকুর


জিরো পয়েন্ট হতে বামদিকে গেলে পাবেন গোল পুকুর। এটি আরেক মায়াময় সৌন্দর্যের স্থান।বর্ষাকালে এর পানি স্বচ্ছ  থাকে। এর শান্ত ও স্বচ্ছ পানি আপনার মনকে মুহূর্তেই ভাল করে দিতে পারে। 

এছাড়া ফরেস্ট্রি ইন্সটিটিউট, সেন্ট্রাল ফিল্ডের পাশের সুউচ্চ পাহাড়, মেরিন সায়েন্স ফ্যাকাল্টির পাশের নির্জন পাহাড়,সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পাশে ঝুলন্ত ব্রীজ ইত্যাদি লোকেশন অসাধারন দৃষ্টিনন্দন।

ভ্রমণপিপাসুদের ঘুরে বেরানোর ক্ষেত্রে আমি সাজেস্ট করব আমাদের ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় হল শীতকাল। কারন এই সময় সাপের উপদ্রব থাকে না। শীত চলে গেলে ক্যাম্পাসের পাহাড়ে বৃক্ষবেষ্টিত এলাকায় সাপের উপদ্রব খুব বেড়ে যায় যা নির্ভয়ে ঘুরে বেরানোর পথে একটা বাধা বলা যায়।

।চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আরও জানুন।

View Larger Map





No comments:

Post a Comment