বাংলাদেশের সেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়


বাংলাদেশের সেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়

একটি দেশের জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি তৈরির অন্যতম মূল বুনিয়াদ হিসেবে কাজ ঐ দেশের উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশ ও জাতির অর্থনীতি ও সার্বিক বিকাশের জন্য এ প্রতিষ্ঠানগুলো অগ্রনী ভূমিকা পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের(ইউজিসির) পরিসংখ্যানমতে,
আমাদের দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৯৭টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সেরা কোনগুলো,তা বিবেচনার জন্য বেশ কিছু মানদণ্ড রয়েছে। এসবমানদণ্ডের মধ্যে আছে
  • উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ড,
  • গবেষণা, শিক্ষার বৈচিত্র্য,
  • শিক্ষার পরিবেশ,
  • ছাত্রসংখ্যা,
  • সুনাম,
  • কর্মক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা ও
  • সামাজিকপুঁজি গঠনে ভূমিকা।


এ রকম মানদণ্ডের বিবেচনায় সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় 
  1. প্রথমে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
  2. তার পরে রয়েছে যথাক্রমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,
  3. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 
  4. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,
  5. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,
  6. বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,
  7. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
  8. নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি,
  9. খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়,
  10. ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): 



প্রায় ৯১ বছরে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে দেশের প্রায় সব রাষ্ট্রনায়ক, অর্থনীতিবিদ সমাজবিজ্ঞানী, আইনজীবীসহ সুশীল সমাজের অনেক নেতাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ নিয়েছেন।



১০টি অনুষদ, ৭৫টি বিভাগ, ৯টি ইনস্টিটিউট ও ৩৩টি গবেষণাকেন্দ্রসমৃদ্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এখন প্রায় ৩৪ হাজার। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, শ্রীলংকাসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের ৮৭টি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিনিময় ও গবেষণায় সহযোগিতার চুক্তি রয়েছে।



দেশের করপোরেট গ্রুপের শীর্ষ নির্বাহী পদ দখল করে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশে করপোরেটজগতের ধারণা নিয়ে এসেছে আইবিএ। এ বিষয়ে আইবিএর পরিচালক অধ্যাপক গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, এখানকার শিক্ষার্থীরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রাখছে। বিশ্বব্যাপী এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কদর রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ দেশের ওষুধপ্রযুক্তি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম এ খাত নির্ভরশীল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর। এখন পর্যন্ত দেশের সাড়ে ১২ হাজারের বেশি ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে এ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সরাসরি সম্পৃক্ত। 
গত পাঁচ বছরে বিশ্বসেরা দুটি গবেষণার সঙ্গে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন বিশেষজ্ঞ ড. মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পাটের জিন আবিষ্কার করেন।


একই বিভাগ থেকে থ্যালাসেমিয়া ও রক্তস্বল্পতা রোগের ওপর একটি গবেষণা হয়েছে, যার
সফল ফলাফল বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।

বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট):


বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছে বুয়েট। ধারাবাহিকভাবে দক্ষ প্রকৌশলী তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। বুয়েটের
বিশেষজ্ঞরাই যমুনা ও পদ্মা সেতুর কাজ করেন। দেশের উন্নয়নকাজের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ও স্থপতিদের অবদান অপরিসীম। পানি, বিদ্যুৎ, সড়ক, যোগাযোগ ও আবাসন খাতের ব্যবস্থাপনার নেতৃত্বেও রয়েছেন এ প্রতিষ্ঠানের
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার, সদরঘাটে অবস্থিত একটি স্বায়ত্বশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্বতন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু। অধ্যাপক ড: এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৮৫৮ সালে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশ করার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি পুর্নাজ্ঞ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপ নেয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবহিত প্রাক্তন নাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, তবে এটি জগন্নাথ কলেজ নামেই বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় জুড়ে পরিচিত ছিল। এটি ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ। ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে এর প্রতিষ্ঠা হয়। ১৮৭২ সালে এর নাম বদলে জগন্নাথ স্কুল করা হয়। বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল চৌধুরী তার বাবার নামে জগন্নাথ স্কুল নামকরন করেন । ১৮৮৪ সালে এটি একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজে ও১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর কলেজে পরিণত হয়। এসময় এটিই ছিল ঢাকার উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শুরু হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির শিক্ষার্থী , শিক্ষক , গ্রন্থাগারের বই পুস্তক , জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয় । । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার সাজাতে জগন্নাথ কলেজ গ্রন্থাগারের ৫০ ভাগ বই দান করা হয়। জগন্নাথ কলেজে আই,এ, আই,এসসি, বি,এ (পাস) শ্রেণী ছাড়াও ইংরেজি, দর্শন ও সংস্কৃতি অনার্স এবং ইংরেজিতে মাস্টার্স চালু করা হলেও ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনমিত করা হয় জগন্নাথকে। পুরানো ঢাকার নারী শিক্ষায় বাধা দূর করতে ১৯৪২ সালে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে ১৯৪৯ সালে আবার এ কলেজে স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়।১৯৫২সালে ভাষা আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ রফিকউদ্দিন (ভাষা শহীদ রফিক) আত্মত্যাগ করেন । ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় কো-এডুকেশন চালু করেন। ১৯৬৮ সালে এটিকে সরকারীকরণ করা হয়, কিন্তু পরের বছরেই আবার এটি বেসরকারী মর্যাদা লাভ করে। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে এটি পুর্নাজ্ঞ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হয় । বর্তমানে মোট ছয়টি অনুষদের অধীনে ৩১ টি বিভাগের ও একটি ইন্সিটিউটের মাধ্যমে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে । ২০শে অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি):


চার দশক ধরে দেশের মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ বিষয়ে দক্ষ জনবল তৈরি করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠানের সামুদ্রিক ও মৎস্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট গবেষণা ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সুনাম অর্জন করেছে। এ ইনস্টিটিউটে অ্যাকুয়াকালচার প্ল্যানিং, মেরিন ফিশারিজ, ফিশারিজ ম্যানেজমেন্টসহ কয়েকটি বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। কর্মক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক ও মৎস্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা এখনো আধিপত্য বিস্তার করে আছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও ফরেস্ট্রি বিভাগও দেশে-বিদেশে স্বীকৃতি পেয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম ও ড.মুহাম্মদ ইউনূস। 


জামাল নজরুল ইসলাম প্রায় দুই যুগ কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি মেরিল্যান্ড, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার সঙ্গে জড়িত।




পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলামের গ্রন্থ 'আলটিমেট ফেট অব দি ইউনিভার্স' ও 'ইনট্রোডাকশন টু ম্যাথমেটিক্যাল কসমোলজি' পৃথিবীর সব বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য।





নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস ক্ষুদ্রঋণের জন্য সারা বিশ্বে সমাদ্রিত।
দারিদ্র্য দূরীকরণে তার উদ্ভাবিদ ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালু করা হচ্ছে। দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. ইউনূস এখন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। তার কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশে-বিদেশে একটি মর্যাদার আসন গড়ে তুলেছে। 

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং অর্থনীতি বিভাগ দেশের সীমা পেড়িয়ে বিদেশেও সুনাম কুড়িয়েছে। দেশের বিচার বিভাগে এককভাবে সবচেয়ে বেশি বিচারকের পদ দখল করে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধিত্ব করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক শিক্ষার্থীরা। 

এছাড়া সাহিত্য এবং ভাষাবিজ্ঞান গবেষণায়ও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অপরিসীম। বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. আলাউদ্দিন আল আজাদ ভাষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান, ড. মনিরুজ্জামান ড. আহমদ ছফা, লেখক আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং ড. মাহবুবুল হক এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক এবং বর্তমান অধ্যাপক।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়(জাবি):



দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠানটির রসায়ন, অর্থনীতি, নৃবিজ্ঞান ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। এর রয়েছে পাঁচটি অনুষদের ২৮টি বিভাগ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতে পিএইচডির গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে দেশে-বিদেশে।বাংলাদেশে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের গোড়াপত্তন হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েই। একে অনুসরণ করে এখন প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই চালু হয়েছে বিভাগটি। বাংলাদেশে অডিও
ভিজুয়াল মিডিয়ার বেশির ভাগ জায়গা এ বিভাগের শিক্ষার্থীদেরই দখলে।
আর্সেনিক নিয়ে গবেষণায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। আবার প্রত্নতত্ত্ববিষয়ক গবেষণা ও কর্মকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক অবদান রাখছে।
এশিয়ার অন্যতম বৃহত্ ফার্মাসিউটিক্যাল ল্যাবরেটরি রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিগগিরই এখানে স্থাপন করা হবে আরেকটি বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্র।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি):



দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কৃষি শিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) দেশের কৃষির উন্নয়নে অর্ধশতাব্দী ধরে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। কৃষি, মৎস্য, গবাদিপশু ও পোলট্রিশিল্পের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবনে অগ্রণী
ভূমিকা পালন করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) তত্ত্বাবধানে দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন
গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্ভাবন হয়েছে ফল ও ফসলের জাতসহ নতুন নতুন কৃষিপ্রযুক্তি। 
শস্যবিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে,উচ্চফলনশীল ধানের জাত ও বিভিন্ন ফলের জাত উদ্ভাবন, শস্যক্ষেতে সহজে রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি, বোরো মৌসুমে কম পানি ব্যবহার করে উৎপাদনের কলাকৌশল ও বীজ শোধনযন্ত্র।
পশুসম্পদবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে, মোরগ- মুরগির রানীক্ষেত রোগ, হাঁসের প্লেগ ভ্যাকসিন, কৃত্রিম পশু প্রজনন প্রযুক্তি,
কোয়েলের উচ্চ উৎপাদনশীল জাত, সয়াদুধ ইত্যাদি। দেশের কৃষি-সম্পর্কিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এ ক্যাম্পাসেই অবস্থিত।



দেশেরপোলট্রি মুরগি নিয়ে প্রথম গবেষণাও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। এছাড়াও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফলজ বৃক্ষের সংগ্রহশালা বাউ জার্মপ্লাজম সেন্টার এ ক্যাম্পান এ অবস্থিত। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা। এখান থেকে ডিগ্রিধারীরা সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে শীর্ষ পযায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। ময়মনসিংহে ১ হাজার২০০ একর জমি নিয়ে ১৯৬১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ পর্যন্ত ২৩ হাজার ২৭০ জন স্নাতক, ১২ হাজার ৭৮৪ জন স্নাতকোত্তর ও ৩৫৫ জন পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করে বিভিন্ন খাতে কাজ করে দেশের কৃষি অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়(রাবি):



গত বছর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাড়া ফেলে দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। আইনস্টাইনের আলোর গতির তত্ত্বের যথার্থতা নিয়ে যখন
সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গিয়েছিল, তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক প্রমাণ করেন, আইনস্টাইনের তত্ত্ব সঠিক, তবে তত্ত্বটি অসম্পূর্ণ। এ প্রতিষ্ঠানের ফলিত পদার্থবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ওসমান গনি তালুকদার ও পদার্থবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মুসফিক আহমদ যৌথভাবে গ্যালিলিও, নিউটন, আইনস্টাইন ও ডি-ব্রগলির তত্ত্বের সমন্বয় ঘটাতে সক্ষম হন। তাদের ১৫
বছরের গবেষণালব্ধ তত্ত্বের মাধ্যমে তারা পেয়েছেন তিনটি সমীকরণ ও কিছু মৌলিক ধ্রুবসংখ্যা। এ সমীকরণ ধ্রুবসংখ্যা দিয়ে পূর্ণতা লাভ করে বা সম্প্রসারণ হয় আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার মতবাদ।


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ গবেষণা ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এখানে দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা নিয়মিত গবেষণা করেন।
এখানকার প্রাণিবিজ্ঞান ও আইন বিভাগেরও আলাদা সুনাম রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে ৯টি অনুষদে ৪৭টি বিভাগ। এটি ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর কয়েকটি বিভাগে নিয়মিত পিএইচডি ডিগ্রিও দেয়া হয়।

নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি:


বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৩ সালে যাত্রা করে দেশের দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে নিরলসভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচলনা করছে। গড়ে তুলছে দেশের সরকারি-বেসরকারি খাতের যোগ্য নেতৃত্ব। নামকরা বহুজাতিক ও
দেশীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবসম্পদ বিভাগগুলোর পছন্দের তালিকার প্রথম সারিতে থাকেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীরা। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
এদের বেশির ভাগই চাকরি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে সফল।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু করে নর্থসাউথ। দেশের বাজারে এ প্রতিষ্ঠানের আলোচিত বিভাগ ব্যবসায় প্রশাসন। উত্তর আমেরিকায় পড়াশোনা করা শিক্ষকদের দিয়ে সাজানো এর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি):

দেশের একমাত্র রাজনীতিমুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এটি। প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালের ২৪ নভেম্বর। বিভাগের সংখ্যা ২২।


এখানে শিক্ষার্থী অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক কম। মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার। প্রতিষ্ঠানটি গবেষণার দিক থেকে অন্যান্যবিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে। বিশেষ করে এগ্রো টেকনোলজি বিভাগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় এখানে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন। 
রাজনীতিমুক্ত হওয়ায় এবং শিক্ষার্থীসংখ্যা কম হওয়ায় সেশনজট ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে মানসম্মত শিক্ষা নিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেন শিক্ষার্থীরা।


ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ। গণস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অল্প সময়ে এটির সুনাম বাংলাদেশের পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ২০০৫ সালে স্কুলটি চালু হয়। এখান থেকে ৭৭ শিক্ষার্থী পাবলিক হেলথে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে দেশে-বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর
মধ্যে কিছুটা আলাদা আঙ্গিকের। মানসম্মত পড়ালেখা, শিক্ষার পরিবেশ ও গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাচ্ছে। স্বল্প সময়ে পাবলিক হেলথ, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। এর শিক্ষা কারিকুলামে দক্ষ উদ্যোক্তা গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দেয়া হয়। বিদেশী ভাষাশিক্ষার ওপর স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি চালু করার জন্য মঞ্জুরি কমিশনে অনুমোদন
চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর রয়েছে ১৫টি বিভাগ।


4 comments:

  1. শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় গেল। বালের Rank করে।

    ReplyDelete
  2. বাংলাদেশের সেরা ২০ টি বিশ্ববিদ্যালয়
    ১)ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
    ২)বুয়েট
    ৩)শাবিপ্রবি
    ৪)বাকৃবি
    ৫)রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
    ৬)জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় /চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
    ৭)নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়
    ৮)ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়
    ৯)ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল
    ১০)কুয়েট
    ১১)চুয়েট
    ১২)রুয়েট
    ১৩)বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
    ১৪)ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া
    ১৫)খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
    ১৬)জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
    ১৭)ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়
    ১৮)শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
    ১৯)মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
    ২০)ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়।

    ReplyDelete